1. admin@banglahdtv.com : Bangla HD TV :
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৪০ অপরাহ্ন

ব্লগার অভিজিৎ হত্যায় ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড

Coder Boss
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ৫১০ Time View
কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামিদের আদালতে আনা হয়

ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এক আসামিকে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচ আসামি হলেন আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান ও বরখাস্ত হওয়া মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক, জঙ্গিনেতা আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ও আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম। তাঁদের মধ্যে পলাতক জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছেন শফিউর রহমান ফারাবী। তিনি কারাগারে আছেন।

রায় ঘোষণা উপলক্ষে আজ আদালত এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সকাল ১০টার দিকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয় আসামিদের। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তাঁদের হাজতখানা থেকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়।

পুলিশের অপরাধ ও তথ্য প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার জাফর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, রায়কে ঘিরে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করা হয় অভিজিৎকে। হামলায় অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদও গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এই মামলায় ২৮ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, প্রযুক্তিগত তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর আসামি আবু সিদ্দিক সোহেলকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোহেল অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সোহেলকে প্রটেক্টেড টেক্সট আইডি খুলে দেন চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া।

আসামি আকরাম ও মোজাম্মেল এলিফ্যান্ট রোডে ভাড়া বাসায় থাকতেন। মোজাম্মেল সোহেলকে জানান, অভিজিৎ রায় একজন বড়মাপের নাস্তিক। আকরাম সোহেলকে অভিজিতের ছবি দেখান। ২৬ ফেব্রুয়ারি সোহেল, আকরাম, মোজাম্মেল ও হাসান এলিফ্যান্ট রোডের বাসায় যান। সেখানে মোজাম্মেল সবাইকে বুঝিয়ে দেন, বইমেলায় কে কোথায় থাকবেন, কীভাবে তাঁরা অভিজিৎকে অনুসরণ করবেন। সেদিন মোজাম্মেল সবাইকে জানান, অভিজিৎ বইমেলায় এসেছেন। মোজাম্মেল আনসার আল ইসলামের অপারেশন শাখার মুকুল রানাকে খবর দেন। সেদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে অভিজিৎ ও তাঁর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বইমেলা থেকে বের হয়ে টিএসএসির রাজু ভাস্কর্যের উত্তর-পূর্ব রাস্তার ফুটপাতের ওপর আসেন। তখন আনসার আল ইসলামের অপারেশন শাখার চারজন অভিজিৎকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করেন। এ সময় তাঁর স্ত্রী রাফিদা বাধা দিলে তাঁকেও কুপিয়ে বাঁ হাতের বৃদ্ধা আঙুল কেটে ফেলেন। এ সময় চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া, সেলিম, আকরাম, হাসান, মোজাম্মেল, আবু সিদ্দিক সোহেল ও মুকুল রানা চারপাশে গার্ড হিসেবে অবস্থান নেন। যাতে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া জঙ্গিরা সেখান থেকে নিরাপদে পালিয়ে যেতে পারেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, আসামি সোহেল অভিজিৎ রায়কে হত্যার উদ্দেশ্যে রেকি করাসহ হত্যাকাণ্ডে সহায়তা করেন। আসামি মোজাম্মেল হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

আসামিদের হেলমেট পরিয়ে আদালতে আনা হয়

আসামিদের হেলমেট পরিয়ে আদালতে আনা হয় আদালতে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডে মোট ১২ জন জড়িত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে শফিউর রহমান ফারাবী হত্যাকাণ্ডে প্ররোচনা জোগান। আসামিদের মধ্যে মুকুল রানা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছেন।

অভিজিৎ খুনের সময় জিয়া সেখানে ছিলেন
জঙ্গি নেতা সোহেল ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, আকরাম তাঁকে অভিজিতের ছবি দেখান। ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি, আকরাম ও হাসান বইমেলায় যান। মেলার বিভিন্ন স্টলে ঘুরে দেখেন। অভিজিৎ রায়ের বইয়ের প্রকাশক জাগৃতির স্টলে যান। সেখানে তাঁরা অপেক্ষা করেন। তবে অভিজিৎ সেদিন আসেননি। পরের দিন ২২ ফেব্রুয়ারি আবার তাঁরা বইমেলায় যান। সেদিন অভিজিৎকে জাগৃতির স্টলের সামনে দেখতে পান তাঁরা। ২২ ফেব্রুয়ারি অভিজিৎ রায় বইমেলা থেকে বের হয়ে ধানমন্ডির ২৭ নম্বরের একটি রেস্তোরাঁয় যান। অনুসরণ করে তাঁরাও সেখানে যান। তবে অভিজিৎ সেদিন দ্রুত গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যান।

এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি তাঁরা ইন্দিরা রোডের একটি বাসায় যান। সেদিন তাঁরা ওই বাসার নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে জানতে পারেন, অভিজিৎ ওই বাসায় বেড়াতে এসেছেন। পরে মেজর জিয়া সোহেলকে বলেছিলেন, অভিজিৎকে বইমেলায় হত্যা করা হোক। পরদিন ২৫ ফেব্রুয়ারিও তাঁরা বইমেলায় যান। কিন্তু সেদিন অভিজিৎ বইমেলায় আসেননি। ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলায় যাওয়ার পর শুদ্ধস্বরের স্টলের সামনে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেন অভিজিৎ। কিছুক্ষণ পর মোজাম্মেল তাঁকে জানান, অভিজিৎ বইমেলায় এসেছেন। মেলায় তাঁরা অভিজিৎকে দেখেন। এরপর মোজাম্মেল আকরাম ও হাসানের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পরে তাঁরা বইমেলা থেকে বের হয়ে টিএসএসির মোড়ে অবস্থান করেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে অভিজিৎ বইমেলা থেকে বের হয়ে আসার পর তাঁদের সংগঠনের চারজন অভিজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করেন। আনসার আল ইসলামের অপারেশন শাখার মুকুল রানা, চাকরিচ্যুত মেজর জিয়া, সেলিমসহ তাঁদের সংগঠনের অনেকে সেখানে ছিলেন।

জঙ্গি নেতা আরাফাত রহমান আদালতকে বলেন, সেদিন রাত সাড়ে আটটার দিকে অভিজিৎ ও তাঁর স্ত্রী বইমেলা থেকে বের হয়ে আসতে থাকলে মেজর জিয়া তাঁকে টিএসএসির মোড়ের দিকে যেতে বলেন। তিনি ও অন্তু টিএসএসির মোড়ের রাজু ভাস্কর্যের কাছে উত্তর-পূর্ব দিকের ফুটপাতের দিকে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন, তাঁদের সহযোগী আলী ও আনিক অভিজিৎকে কোপাচ্ছেন। অভিজিতের স্ত্রী চিৎকার দিলে আনিক তাঁকে কুপিয়ে আহত করেন। আনিকের চাপাতির কোপ অভিজিতের স্ত্রীর হাতে লাগে। লোকজন জড়ো হলে তাঁরা সেখান থেকে পালিয়ে যান। এই হত্যাকাণ্ডের সময় মেজর জিয়া, সেলিম, মুকুল রানা, সোহেল, সাকিব, শাহরিয়ার, হাসান, আকরাম সেখানে অবস্থান করছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 banglahdtv
Design & Develop BY Coder Boss