1. admin@banglahdtv.com : Bangla HD TV :
সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩২ পূর্বাহ্ন

ঢাকার স্কুল কলেজে ড্রেস-জুতার সিন্ডিকেট ব্যবসা!

Coder Boss
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ৩৯৪ Time View

ঢাকার স্কুল-কলেজে ড্রেসের একচেটিয়া ব্যবসা করছে একটি সিন্ডিকেট। আর তাতে যুক্ত আছেন স্কুল কর্তৃপক্ষের কেউ কেউ। বছরের পর পর একই সিন্ডিকেট এই ব্যবসা করছে। বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের একটি আদালত এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে রায় দিয়ে প্রতিযোগিতা আনার নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মো. মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই সিন্ডিকেটের কারণে ড্রেসের মান খারাপ হচ্ছে, আর অভিভাবকদের কাছ থেকে উল্টো বেশি টাকা নেয়া হচ্ছে। তাই প্রতিবছর টেন্ডার ডেকে কমপক্ষে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে প্রতিযোগিতামূলকভাবে কাজ দেয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে।

ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজে চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান স্কুলের মধ্যেই দোকান ভাড়া নিয়ে এককভাবে গত প্রায় ১৮ বছর ধরে (২০০৩ সাল থেকে) ড্রেস বিক্রি করে আসছে। এটা কমিশনের নজরে এলে তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই প্রতিষ্ঠানকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা এবং প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে প্রতিবছর কমপক্ষে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে পোশাক সরবরাহের দায়িত্ব দেয়ার আদেশ দেয়া হয়। রায়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে বলা হয়, স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগসাজশে ওই প্রতিষ্ঠানটি এককভাবে পোশাক সরবরাহ আর শিক্ষার্থীদের ওই দোকান থেকেই পোশাক কিনতে বাধ্য করা হয়।

চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. ইব্রাহিম মোল্লা তার এই একচেটিয়া ব্যবসার কথা স্বীকার করেন। তবে তার দাবি, আগে যিনি ছিলেন তিনি ২৫ বছর ধরে একচেটিয়াভাবে ছিলেন। ফখরুদ্দিন বাবুর্চি আছেন ৭০ বছর ধরে। তাহলে তার দোষ কোথায়? তিনি জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে একটি কক্ষ দিয়েছে পোশাক বিক্রির জন্য। বিনিময়ে তাকে মাসে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হয়। যা অনেক বেশি। এর বাইরে তিনি আর কোনো সুবিধা দেন না বলে দাবি করেন।

প্রতি সেট পোশাকের জন্য তিনি নেন এক হাজার ২০০ টাকা। বছরে ১৩ হাজার সেট পোশাক বিক্রি হয়। তিনি জুতা, বেল্ট, ব্যাজও বিক্রি করেন।

ইব্রাহিম মোল্লা মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের ড্রেসও সরবরাহ করেন। তিনি জানান, ঢাকার স্কুলগুলোতে পাঁচ-ছয়টি প্রতিষ্ঠান পোশাক সরবরাহ করে। তারাই বছরের পর বছর এই কাজ করছেন। স্কুল-কলেজে বই, স্টেশনারি, ক্যান্টিনও এভাবেই চলে বলে জানান তিনি।

অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু অভিযোগ করেন, ‘ঢাকার স্কুলগুলোর ম্যানেজিং কমিটি ও কিছু শিক্ষকের সাথে যোগসাজশে এই একচেটিয়া ব্যবসা চলে। পোশাক থেকে শুরু করে বই-খাতা সবই স্কুলের দোকান থেকে কিনতে হয়। ওইসব দেকানে পণ্যের মানও খারাপ, দামও বেশি। আর স্কুলের মধ্যেই চলে এসব দোকান। এর মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। আমরা আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকবার অভিযোগ জানিয়েও প্রতিকার পাইনি।’

ভিকারুননিসা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুননাহার বলেন, তিনি নতুন এসেছেন তাই জানেন না কীভাবে একটি প্রতিষ্ঠান একচেটিয়াভাবে বছরের পর বছর পোশাক সরবরাহের কাজ পায়। তবে আদালতের নির্দেশের কপি তিনি এখনো পাননি। পেলে ব্যবস্থা নেবেন। তিনি জানান, ‘এসব সিদ্ধান্ত ম্যানেজিং কমিটি নেয়, তবে অধ্যক্ষের মতামত থাকে। কিন্তু এসব ব্যাপারে স্বচ্ছতা প্রয়োজন।’

প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান জানান, সবশেষ রায়টি ভিকানরুননিসা স্কুল ও কলেজের ব্যাপারে হলেও দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এই ধরনের সিন্ডিকেট ব্যবস্থা ভেঙে প্রতিযোগিতামূলক ব্যবস্থা চালুর জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।

প্রতিযোগিতা কমিশনের এই নির্দেশনা এখনো হাতে পাননি বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম মোহাম্মদ ফারুক। তবে তিনি মনে করেন, ‘এই ধরনের একচেটিয়া সরবরাহ ব্যবস্থা অনৈতিক। এর অবসান হওয়া প্রয়োজন।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 banglahdtv
Design & Develop BY Coder Boss