করোনার ধকল কাটিয়ে চীনের অর্থনীতি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ১৮ দশমিক তিন শতাংশ বেড়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ১৯৯২ সালে অর্থবছরের ত্রৈমাসিক হিসাব রাখা শুরু করে চীন। এরপর দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) এটিই সবচেয়ে বড় উল্লম্ফন।
তবে শুক্রবারের (১৬ এপ্রিল) এই প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার তুলনায় কম। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক জরিপে অর্থনীতিবিদেরা ১৯ শতাংশের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
গেল বছরের অর্থনৈতিক বিপুল সংকোচনের সঙ্গে তুলনা করে অবশ্য তারা ব্যাপক সন্দিহান ছিলেন। শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে পরিস্থিতি কম ইঙ্গিতবাহী ছিল বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকে চীনের অর্থনীতি ছয় দশমিক আট শতাংশ নেমে গিয়েছিল। করোনা মহামারির চূড়ান্ত পর্যায়ে দেশটিজুড়ে লকডাউন চলছিল তখন।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, জাতীয় অর্থনীতির শুরুটা এবার দারুণ হয়েছে।
প্রথম প্রান্তিকের উপাত্ত প্রকাশ করে তারা আরও জানায়, মহামারি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। ব্যাপক অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতায় আন্তর্জাতিক ভূচিত্র জটিল হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
চীনের পরিসংখ্যান বিভাগে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে এবং অব্যাহত ফিরে আসার আভাস দিয়েছে। গেল বছরের নাজুক পরিসংখ্যানের চেয়ে এবারে তাদের অস্বাভাবিক শক্তিশালী দেখা গেছে।
শিল্পজাত উৎপাদনও একবছর আগের তুলনায় ১৪ দশমিক এক শতাংশ বেড়েছে। আর খুচরা বিক্রি বেড়েছে ৩৪ দশমিক দুই শতাংশ।
পরামর্শক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান অক্সফোর্ড ইকোনমিক্সের এশীয় অর্থনীতি বিষয়ক প্রধান লুইস খুইজেস বলেন, মাসিক সূচকগুলো বলে দিচ্ছে যে, চীনের শিল্পজাত উৎপাদন, খরচ ও বিনিয়োগ—মার্চে সবগুলোতেই আনুক্রমিকভাবে গতি পেয়েছে। যদিও প্রথম দুমাসে কিছুটা নাজুক অবস্থায় ছিল।
তবে বিশ্লেষকরো এও বলছেন, সরকারি রাজস্ব ও আর্থিক সহায়তা কমিয়ে দেওয়ায় বেশ কয়েকটি খাতের প্রবৃদ্ধি কমে যাবে।
এ বিষয়ে ইকোনোমিস্ট ইনটেলিজেন্ট ইউনিটের চীনের অর্থনীতি বিষয়ে শীর্ষ বিশেষজ্ঞ ইউই সু মনে করেন, অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে প্রণোদনার অভাবের কারণে বাণিজ্য ও শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধির এই ধারা বছরের বাকি দিনগুলোতে ধরে রাখা সম্ভব নাও হতে পারে।
২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকের সঙ্গে তুলনা করলে এ কথা জোর দিয়ে বলা যায় যে, দৃশ্যত চীনের অর্থনীতি আবার গতি পাচ্ছে। চলতি বছরে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ।
Leave a Reply