ময়মনসিংহে ঈশ্বরগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যনের বিরুদ্ধে ধর্ষণে অন্ত:স্বত্ত্বা ও গর্ভপাত করাতে গিয়ে মেয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ এনে বাবা মামলা দায়ের করেছেন আদালতে। তবে হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে বলা হয়েছে, ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে ‘ব্রেইন স্ট্রোক’ করার কারণে।
বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। চেয়ারম্যানের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভাতিজা নায়েব এ জাহান মনী।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় যে হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে বলা হয়, যক্ষ্মার জীবাণু শরীরে ছড়িয়ে পড়া এবং ওই জীবাণু ব্রেনের রক্তনালীতে বাসা বাঁধার কারণে ‘ইশকেমিক স্ট্রোক’ মৃত্যুর কারণ স্বর্ণার। ডেথ সার্টিফিকেট দেখে কয়েকজন চিকিৎসক এমনটি জানিয়েছেন।
কিন্তু স্বপন মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করেন, মায়ের সহায়তায় উচাখিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তরুণীটিকে বিয়ের প্রলোভনে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করে। এতে অন্ত:স্বত্ত্বা হয়ে পড়লে গর্ভপাত করা হয়। এতে রক্তক্ষরণ শুরু হলে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলাটি এফআইআর করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন থানার ওসিকে।
জানা যায়, উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের স্বপন গত মঙ্গলবার ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ওই মামলাটি করেছেন। স্বপনের স্ত্রী আছমার সাথে ২০১৭ সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। তবে তাদের তিন মেয়ে এ এক ছেলে সন্তান রয়েছে। সন্তানরা সবাই মা আছমার কাছে ছিল। এর মধ্যে এক মেয়ে স্বর্ণা (১৬)। স্বর্ণা অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১১ মে রাতে মারা যান। মাথায় যন্ত্রণা হওয়ায় প্রথমে উচাখিলা বাজারে, ১ মে ঈশ্বরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ময়মনসিংহের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয় তার। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ১০ মে ঢাকার নিউরোসাইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ মে রাত ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তরুণীর মা আছমা জানান, স্বামীর সাথে ডিভোর্স হওয়ায় প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে মিথ্যা মামলা করেছেন। তার মেয়ে স্ট্রোক করে মারা গেছে। তিনিও আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
উচাখিলার আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, মেয়েটি স্ট্রোক করে মারা গেছে। কিন্তু নির্বাচনকে সামনে রেখে তাকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার জন্য চক্রান্ত করে তার নামে মামলা করানো হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো: আবদুল কাদির মিয়া জানান, আদালত থেকে তারা কোনো ধরনের আদেশ পাননি। আদেশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
Leave a Reply