1. admin@banglahdtv.com : Bangla HD TV :
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:০৮ পূর্বাহ্ন

গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় বিচার বিভাগের নিরপেক্ষ ভূমিকা জরুরি -সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ

বিশেষ প্রতিনিধি
  • Update Time : রবিবার, ১৩ জুন, ২০২১
  • ৩১৬ Time View

গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় বিচার বিভাগের নিরপেক্ষ ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেছেন, দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে বিচার বিভাগকে মুক্তসাংবাদিকতার পক্ষে ভূমিকা নেয়া উচিত। তারা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আদালত আজ মুক্ত সাংবাদিকতার পক্ষে রায় দিচ্ছেন। অথচ বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো সংবিধানবিরোধী আইন বন্ধে আদালতের ভূমিকা আমরা দেখতে পাইনি। সাংবাদিকরা গ্রেফতার হচ্ছেন। বছরের পর জেল খাটছেন অথচ জামিন দেয়া হচ্ছে না। দেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন বলা হয়। কিন্তু কতটুকু স্বাধীন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দেশের বিচার বিভাগ নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারলে রুহুল আমিন গাজী মুক্তি পেতেন।

আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা এ কথা বলেন।

ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএফইউজে ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ। বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোরসালীন নোমানী, রফিকুল ইসলাম আজাদ সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, বিএফইউজের সহসভাপতি মোদাব্বের হোসেন, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ খায়রুল বাশার, ডিইউজের সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাত ও রাশেদুল হক, বিএফইউজের সহকারি মহাসচিব শহীদুল্লাহ মিয়াজী, ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও বিএফইউজের নির্বাহী সদস্য একেএম মহসীন, ডিইউজে নেতা শাহজাহান সাজু, দেওয়ান।মাসুদা, সাখাওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী প্রমুখ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশীদ আলম, দপ্তর সম্পাদক তোফায়েল হোসেন, নির্বাহী সদস্য জাকির হোসেন, ডিইউজের সাবেক সহসভাপতি সৈয়দ আলী আসফার, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য জেসমিন জুঁই প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার ও কোষাধ্যক্ষ গাজী আনোয়ারুল হক।

শওকত মাহমুদ বলেন, এ সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ গণমাধ্যম। আর সত্য হচ্ছে প্রধান শত্রু। তিনি বলেন, সত্য প্রকাশের জন্য অনেক সাংবাদিককে আটক করে রাখা হয়েছে। অনেক সাংবাদিক খুন হয়েছেন। মামলা-নির্যাতনে হয়রানি করা হচ্ছে অহরহ। এসরকারের আমলে এমন একটি দিন পাবেন না যেদিন সাংবাদিক জেলে ছিল না। তিনি রুহুল আমিন গাজীসহ সকল কারাবন্দি সাংবাদিকের মুক্তি দাবি করে তিনি আরো বলেন, মামলার মেরিট দেখে আর সংবিধান প্রদত্ত অধিকার প্রয়োগ করে বিচার বিভাগ রায় দিলে এসব মামলা টিকতে পারে না।

এ প্রসঙ্গে শওকত মাহমুদ আমাদের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে প্রেস ফ্রিডম নেই। অথচ ওই দেশের বিচারপতিরা সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অনেক মামলার আসামিকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় সাংবাদিক আটককে অবৈধ ঘোষণা করেছেন।
সাংবাদিকদের এ নেতা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক দুটি ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ভারতে সাংবাদিক বিনোদ দুয়ার বিরুদ্ধে বিজেপির এক নেতার দায়ের করা দেশদ্রোহের মামলা খারিজ করে দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আদালত বলেছেন, ১৯৬২ সালের নির্দেশিকা অনুযায়ী দেশদ্রোহের মামলায় প্রত্যেক সাংবাদিকের সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কেননা সরকারের সমালোচনা কোনোভাবে রাষ্ট্রদ্রোহ হতে পারে না।
একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিচার বিভাগ তথ্য ফাঁসের তদন্তে সাংবাদিকের তথ্যদাতার তথ্য জানতে তাকে আইনি বাধ্যবাধকতায় ফেলার চর্চা ভবিষ্যতে অনুসরণ করবে না”। মিডিয়ার স্বাধীনতা রক্ষায় আমাদের বিচারবিভাগকেও এভাবে এগিয়ে আসা উচিত।

সভাপতির বক্তব্যে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার মূল লক্ষ্য তাদের অপশাসনকে দীর্ঘায়িত করা। তিনি মুক্ত সাংবাদিকতাবিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল কালা কানুন বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, কোনো সভ্যদেশে এমন ভয়ংকর আইন কল্পনাও করা যায় না।

তিনি বলেন, আমেরিকার সংবিধানে প্রথম সংশোধনী আনা হয় মিডিয়ার স্বাধীনতা রক্ষায়। এতে বলা হয়,সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করে এমন কোনো আইন কখনো মার্কিন কংগ্রেসে পাস করবে না। এরাই হলো সভ্য। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশের সংবিধানেও সংশোধনী এনে মিডিয়ার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা দরকার।

বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন বলেন, সরকারকে অতীত থেকে শিক্ষা নেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, ’৭৫ পূর্বে সংবাদপত্র বন্ধ করে এবং নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়ে তৎকালীন সরকার নিজেদের রক্ষা করতে পারেনি। তিনি বলেন, বিচার বিভাগ নিরপেক্ষ অবস্থান নিলেই রুহুল আমিন গাজীসহ কারাবন্দি সকল সাংবাদিকের মুক্তি সম্ভব।

বিএফইউজে’র সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ বিচার বিভাগ মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল উল্লেখ করে বলেন, গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় বিচার বিভাগকে ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি রুহুল আমিন গাজীসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কিভাবে মামলা হয়, সে প্রশ্ন তুলে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান নিশিথ ভোটের সরকার হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে পরিচিতি পেয়েছে উল্লেখ করে বলেন, এ সরকার অবৈধ। এ সরকার কর্তৃত্ববাদী। টিকে থাকার জন্য এ সরকার কিছু করতে পারে।

ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম অবিলম্বে কারাবন্দি সাংবাদিকদের মুক্তি এবং শওকত মাহমুদসহ অন্যদের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, রুহুল আমিন গাজী কিডনি সমস্যাসহ অনেক জটিল রোগে আক্রান্ত। অথচ তার চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 banglahdtv
Design & Develop BY Coder Boss