মোটরসাইকেলে চালক ছাড়া অন্য কোনো আরোহী থাকলেই পুলিশের জরিমানার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আইন অমান্যের অভিযোগে দেওয়া হচ্ছে মামলাও।
মঙ্গলবার (২৯ জুন) সীমিত লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে মোটরসাইকেলের ওপর ট্র্যাফিক পুলিশের কঠোর নজরদারি দেখা গেছে।
সড়কে পুলিশের এমন কড়াকড়ি আর জরিমানায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। সরকারি-বেসরকারি সব কার্যক্রম খোলা রেখে এমন লকডাউন দেওয়ার কোনো মানেই হয় না। এটা সাধারণ মানুষের জন্য কষ্ট ছাড়া আর কিছুই না বলে জানান অনেকে।
রাইড শেয়ারিংয়ে যুক্তরা বলছেন, ব্যক্তিগতগাড়ি, স্টাফবাস, রিকশায় একাধিক যাত্রী পরিবহনে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু আমরা কেন পারছি না? আমাদের না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। আজ আয়ের চেয়ে মামলার টাকাই বেশি হয়ে গেছে।
ট্রাফিক পুলিশের ধানমন্ডি জোনের উপ-কমিশনার জাহিদুল ইসলাম বলেন, কাউকে হয়রানি নয়। সরকারের পক্ষ থেকে যেসব নির্দেশনা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জারি করা হয়েছে, সেটি বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আমরা। প্রজ্ঞাপনে মোটরসাইকেলে চালক ছাড়া আরোহী বহনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যারা নির্দেশনা অমান্য করছে সেসব ক্ষেত্রে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।
সোমবার (২৮ জুন) রাতে করোনা সংক্রমণ রোধে মোটরসাইকেলে চালক ছাড়া অন্য আরোহী বহন না করতে অনুরোধ জানায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়, লক্ষ্য করা যাচ্ছে, লকডাউনের মধ্যে মোটরসাইকেলে চালকের সঙ্গে পরিচিত ব্যক্তি রাইড শেয়ার করছেন। অথবা কেউ কেউ পেশাগত কারণেও রাইড শেয়ার করছেন। ফলে একই ব্যবহৃত হেলমেট বারবার বিভিন্ন মানুষ ব্যবহার করছেন। এতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।
এমন অবস্থায় বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় জরুরি প্রয়োজনে রাজধানীতে চালক ব্যতীত অন্য আরোহী নিয়ে মোটরসাইকেলে চলাচলে নিরুৎসাহিত করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রিকশায় যাতায়াতের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাও-উবার বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল সোমবার (২৮ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় পাঠাও কর্তৃপক্ষ।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সোমবার (২৮ জুন) থেকে সারাদেশে সীমিত পরিসরে লকডাউন কার্যকর হয়েছে। লকডাউন চলবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। রোববার (২৭ জুন) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে সাত দিন সারাদেশে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
রোববার (২৭ জুন) প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে
১. সারাদেশে পণ্যবাহী যানবাহন ও রিকশা ব্যতীত সকল গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক নিয়মিত টহলের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
২. সব শপিংমল, মার্কেট, পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৩. খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাওয়া যাবে না। শুধু খাবার নিয়ে যেতে পারবে।
৪. সরকারি-বেসরকারি অফিস বা প্রতিষ্ঠানগুলো শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নিজ নিজ অফিসের ব্যবস্থাপনায় তাদের আনা-নেয়া করতে হবে।
৫. জনসাধারণকে মাস্ক পরার জন্য প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
Leave a Reply