নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. শামীমকে সোমবার (৯ আগস্ট) প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ওই গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নগরের এক হোটেল কর্মচারীর মেয়ে স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। বাবা চাচ্ছিলেন যে কোনোভাবে মেয়েটা যেন আবারও স্বামীর সংসারে যায়। এ জন্য গত বুধবার (৪ আগস্ট) সরকারি জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯–এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চান। পরে নগরের বোসপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই মো. শামীম তাদের বাসায় যান। তিনি মেয়েটির স্বামীর নির্যাতনের বর্ণনা শোনেন। স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি মেয়েটিকে পুলিশ ফাঁড়িতে দেখা করতে বলেন। পরে মেয়েটি গত রোববার (৮ আগস্ট) দুপুরে তার মাকে সঙ্গে করে পুলিশ ফাঁড়িতে যান। এ সময় বাইরে একজন সেন্ট্রি ছিলেন। ভেতরে এএসআই শামীম একাই ছিলেন। তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় কথা বলার জন্য মেয়েটির মাকে শামীম বাইরে যেতে বলেন।
মেয়েটির মা বাইরে এসে দাঁড়ানোর কিছুক্ষণ পরেই মেয়েটি চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বাইরে এসে তাঁর মাকে জানান, ওই পুলিশ তাকে যৌন হয়রানি করেছেন।
মেয়েটির বাবা বলেন, তখন বেলা ২টা ৩৬ মিনিট। আমার স্ত্রী ফাঁড়ির সামনে থেকে ফোন করে আমাকে ঘটনাটি জানান। আমি সঙ্গে সঙ্গে আবার ৯৯৯–এ ফোন করি। তারা আমাকে বোয়ালিয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে বলেন। ওই দিন বিকেলেই বোয়ালিয়া থানায় গিয়ে আমার স্ত্রী এএসআই শামীমের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
এদিকে ওই রাতেই স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ে একটি সালিশ ডাকা হয়। সেখানে এএসআই শামীম মেয়েটির বাবার হাত ধরে ক্ষমা চান। কিন্তু মেয়েটির বাবা তার সঙ্গে মীমাংসা করতে রাজি হননি।
মেয়েটির বাবার অভিযোগ, ওই সালিসে কোনো আপসনামা লেখা হয়নি এবং তারা তাতে সইও করেননি। কিন্তু এএসআই শামীম বোয়ালিয়া থানায় ভুয়া সই করা একটি আপসনামা জমা দেন।
ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরমান আলী বলেন, আমার কার্যালয়ে এএসআই শামীম মেয়েটির বাবার হাতে ধরে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, তিনি তেমন কোনো অন্যায় করেননি। তারপরও তিনি ক্ষমা চাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানাতে মেয়েটির বাবা সোমবার (৯ আগস্ট) দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি খুলে বলেন। পুলিশ কমিশনার তাদের বোয়ালিয়া থানার ওসির কাছে পাঠান।
ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, তারা আপসের কথা অস্বীকার করছেন। তাদের অভিযোগের এখন তদন্ত হবে। ইতোমধ্যেই এএসআই শামীমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য এএসআই শামীমের মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও কলটি রিসিভ হয়নি।
Leave a Reply