বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সকালে তার মরদেহ দাফন করা হয়েছে। আরাফাদ আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের মহশ্রাদ্দিন গ্রামের হাসান প্যাদার ছেলে।
এর আগে গত ২২ আগস্ট উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নে কাশিপুর মারকাজুননূর হাফিজিয়া ও নূরানিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। গত ৯ মাস আগে এই মাদ্রাসায় তাকে হাফেজিতে ভর্তি করা হয়েছিল।
আরাফাদের দাদা নুর হোসেন প্যাদা জানান, ১৫ পারা পর্যন্ত কোরআন শরীফ মুখস্ত করেছিল সে। ঘটনার দিন গত ২২ আগস্ট বিকালে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক জিকিরুল্লাহ আরাফাদকে পড়া মুখস্ত না হওয়ার কারণে মারধর করেন। একপর্যায়ে আরাফাদ দৌঁড়ে মাদ্রাসার তিনতলার ছাদে উঠে যায়। ওই শিক্ষকও তার পিছে পিছে দৌঁড়ে ছাদে উঠেন। শিক্ষকের নির্যাতনের ভয়ে আরাফাদ পালাতে গিয়ে একপর্যায়ে ছাদ থেকে নিচে পরে মাথায় ও ডান চোখে গুরুতর জখম হন।
পরে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা না দিয়ে ওই অবস্থায় মাদ্রাসায় মধ্যে আটকে রাখা হয়। অবস্থা খারাপ দেখে গত ২৩ আগস্ট সকালে তাকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন পর্যন্ত ঘটনাটি আরাফাদের বাবা ও মাকে জানানো হয়নি। পরে তার অবস্থা আরও খারাপ হলে বাবা ও মাকে খবর দেওয়া হয়।
তারা পটুয়াখালী থেকে ওইদিন আরাফাদকে নিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) রাত ৯টায় সে মারা যায়। বুধবার (২৫ আগস্ট) ময়নাতদন্ত শেষে রাত ১১টার দিকে লাশ বাউফলের গ্রামের বাড়ি নিয়ে আসা হয় এবং বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৭টায় আরাফাদকে দাফন করা হয় বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক জিকিরুল্লাহ সাথে তার মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ায় রং নম্বর বলে ফোন কেটে দেন। এরপর আর ফোন রিসিভ করেননি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে হাফেজ জিকিরুল্লাহ পলাতক রয়েছেন।
এ ব্যাপারে বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, এসআই রুহুল আমিনকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, আরাফাদ মাদ্রাসার সিঁড়ি থেকে পা ফসকে পড়ে গিয়ে আহত হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। তবে আরাফাদের অভিভাবকরা এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply