আমি গর্বিত আমি কালের পরিক্রমায় হাজার হাজার সন্তানের জননীরূপে নিজেকে তৈরি করতে পেরে,আমি গর্বিত আমি একজন শিক্ষক, আমি গর্বিত তেরখাদার প্রাণকেন্দ্রে অবস্হিত ঐতিহ্যবাহী ইখড়ি কাটেংগা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পেরে। গর্ববোধ করি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মোঃ কামারুজ্জামানসহ দক্ষ সহকর্মীদের সাথে প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনে এবং শিক্ষার ধারাকে চলমান রাখতে কাজ করতে পেরে। গর্ববোধ করি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মান্যবর সচিব মহোদয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মান্যবর মহাপরিচালক মহোদয়, খুলনা বিভাগীয় উপ পরিচালক মহোদয়সহ সম্মানিত এবং শ্রদ্ধেয় অভিভাবক মন্ডলীদের দিকনির্দেশনায় ছোট্ট কোমলমতি সোনাদের শিক্ষাকে চলমান রাখতে কাজ করতে পেরে।।
আমার শৈশবে লেখাপড়ার হাতে খড়ি হয়েছিল এই স্বপ্নের বিদ্যালয়ে ১৯৮২ সালে। ভাগ্যের লিখনে আজ আমি একুশ বছর এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছি। আমার শৈশব কালীন শিক্ষা গুরুদের সহকর্মী হয়েও আমি এখানে চাকুরী করেছি। তাই বিদ্যালয়ের ইট- -কাঠ -মাটির মমতা আমাকে আচ্ছাদিত করে রেখেছে স্নেহের বাৎসল্যে । মনেহয় এই তো সেদিন পঞ্চম শ্রেণি হতে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি লাভ করে বোর্ড ফাইনাল পরীক্ষায় উপজেলার মধ্যে প্রথম হয়ে গৌরবময় একটা ফলাফল নিয়ে বাবার হাত ধরে তেরখাদার আর একটা ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিলাম। আজ স্মৃতিচারণের একটাই কারণ প্রথম শ্রেণিতে ইংরেজি পাঠদান করতে গিয়ে দেখলাম অভিভাবকদের তালিকায় শ্রেণির বাইরে অবস্থান করছে আমার প্রাক্তন প্রিয় ছাত্রীরা এবং বৌমারা( প্রাক্তন ছাত্রদের স্ত্রী)।
দিন ক্ষণ মাস এবং বছর গড়িয়ে এতদুরে চলে এসেছি একটু একটু করে। অনেক দিন পর স্মৃতিতে শৈশব ; কৈশোরের ডাক এল। একটু কষ্ট হলেও প্রিয় পাঠক আমার ভাবাবেগটা পড়বেন প্লিজ।
আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন যে আমাদের মডেল স্কুলের গর্বিত শিক্ষার্থীদের তালিকায় প্রথম সারির প্রাক্তন ছাত্র বিশিষ্ট পরমানু বিজ্ঞানী (রূপপুরে কর্মরত) এবং তার স্ত্রী ডাক্তার নাসরিন সুলতানার একমাএ কন্যা মাঈশা দিদিভাই প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আজ স্কুল শেষ করে বিশেষ প্রয়োজনে আমি খুলনা রওনা হয়ে গাড়িতে বসে আছি হঠাৎ দেখলাম আমাদের বৌমা মাঈশাকে নিয়ে আমার পাশে বসল খুলনা যাবে বলে। বৌমা জানালো ম্যাডাম বাসা বৈকালীতে মাঈশারকে ক্লাস করাতে তেরখাদা এসেছিলাম আবার ফিরে যাচ্ছি। প্রত্যেক মঙ্গলবার খুলনার বৈকালী থেকে ক্লাস করার জন্য তেরখাদা যায় মাঈশা দিদি ভাই এবং ক্লাস শেষে খুলনাতে ফিরে আসে। কখনও মায়ের সাথে,কখনও চাচুর সাথে আসা যাওয়া করে। এখনকার সময় সবাই যেখানে শহরমুখী সেখানে আমাদের ছাত্রের অগাধ বিশ্বাস আমাদের মডেল স্কুল শহরের স্কুলগুলো থেকে পাঠদানে এবং নীতিনৈতিকতা শিখনে একটুও কম নয়।। এমন বিশ্বাসের জন্য আমরা শিক্ষক হিসাবে সত্যিই ধন্য এবং গর্বিত।।
এভাবেই শিক্ষাধারাকে চলমান রেখে শুধু আমাদের বিদালয় নয় সারা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হয়ে উঠুক বিশ্বস্ততার প্রতীক এবং শিক্ষার প্রতীক।।
সুস্থ থাকুক, দীর্ঘজীবী হোক আমাদের আদরের শিক্ষার্থীরা। এক একটি বিদ্যালয় হোক
হাজার হাজার অভিভাবকের স্বপ্ন পূরণের জীয়নকাঠি।।
Leave a Reply