বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলকে হয়রানি করার জন্য হামলা-গ্রেফতার ও মামলা দিয়ে সয়লাব করে দিয়েছে। এর একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণের পক্ষে যেন কেউ কথা না বলে। এই সমস্ত মামলার লক্ষ্যই হচ্ছে বিরোধী দলকে একরকম বন্দি করে রাখা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপির সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার শুধু বিরোধী নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাই দায়ের করছে না, গ্রেফতার করে রিমান্ডের নামে অমানুষিক নির্যাতন করছে। যা সকল রেকর্ডকে অতিক্রম করেছে। তার জলজ্যান্ত প্রমান হচ্ছে লেখক সাংবাদিক মোস্তাক এর সরকারি হেফাজতে মৃত্যু।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস আর ত্রাসের উপর নির্ভর করেই সরকার টিকে আছে। এছাড়া তাদের আর অন্য কোন ভিত্তি নেই। জনগণ অনেক আগেই তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আওয়ামী সরকারের ব্যক্তিগত লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিণত হওয়ার কারণে শুধুমাত্র বিরোধী দল নিপীড়ণের শিকার হচ্ছে না বরং সারাজাতির উপর যেকোন মুহুর্তে নিপীড়ণ ধেয়ে আসতে পারে এই আশঙ্কার মধ্যে দিনাতিপাত করছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশের যেকোন শহরেই বিএনপি’র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলেই মনে হয় যেন কারফিউ বিরাজ করছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পথে পথে বাধা সৃষ্টি করে। এতো প্রতিবন্ধকতা সত্তেও লক্ষ-লক্ষ জনতা বিএনপি’র সভা-সমাবেশে উপস্থিতি হয়। আর সেজন্য সরকারের মনে দাউ দাউ করে প্রতিহিংসার আগুন জ্বলে। এই কারণেই বিএনপি’র নেতৃবৃন্দের নামে বানোয়াট রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দিয়ে তাদেরকে ধ্বংস করার নীল নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ভীত হয়ে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, মিজানুর রহমান মিনু, সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) এ্যাড. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি- মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সহ ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক এবং রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক- অ্যাড. শফিকুল হক মিলন এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বানোয়াট এই মামলা দায়ের আওয়ামী দু:শাসন ও মাফিয়াতন্ত্রের বহি:প্রকাশ।
তিনি বলেন, নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে এই মামলা মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর কুঠারাঘাত। যেহেতু বাকশালী শাসনের পুনরুত্থান ঘটানো হয়েছে সুতরাং মানুষের মৌলিক অধিকার সুরক্ষার শেষ চিহ্নটুকুও তারা রাখবে না। উল্লেখিত বিএনপি’র গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দের নামে এই মামলা দিয়ে এক গভীর চক্রান্তের দিকে সরকার এগুচ্ছে বলে জনগণ মনে করে।
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠি বাংলাদেশকে এক ব্যক্তির জমিদারীতে পরিনত করতে চাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী আপামর জনতা তাদের এই দু:স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে দেবে না। অতিতের ন্যায় সংগ্রামের মাধ্যমে সংগ্রামী জনতা তাদের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনবে এবং দেশকে আওয়ামী দু:শাসন মুক্ত করবে। আমি অবিলম্বে উপরোক্ত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বানোয়াট ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি করছি।
Leave a Reply