আজ ৬ ডিসেম্বর (রোববার) ঐতিহাসিক স্বৈরাচার পতন দিবস। ১৯৯০ সালের এই দিনে তীব্র গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এরশাদের পতনের মধ্য দিয়ে জাফর-জয়নাল-দিপালী-নুর হোসেন-মিলনসহ বহু মানুষের আত্মত্যাগে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করে দেশ।
১৯৮৩ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে ছাত্রসমাজের তীব্র প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে শুরু হয় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন। ক্ষমতা ধরে রাখতে এরশাদ শুরু করে দমন পীড়ন। ছাত্রদের রক্তে রাজপথ রক্তাক্ত হয়। ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোও মাঠে নামে। নতুন গতি পায় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন।
১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে বুকে পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লিখে অংশ নেয়। পুলিশের গুলিতে নিহত হয় নুর হোসেন। এরপর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন রুপ নেয় গণআন্দোলনে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫ দলীয় জোট ও বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দলীয় জোটসহ সব দল গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনে রাজপথে নামে। ধারাবাহিক আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর এরশাদের লেলিয়ে দেওয়া বাহিনীর গুলিতে বিএমএ নেতা ডা. শামসুল আলম মিলন নিহত হলে জারি করা হয় জরুরি আইন। সে আইন অমান্য করে রাজপথে নামে সব শ্রেণীপেশার মানুষ। টানা আন্দোলনে নড়বড়ে হয়ে পড়ে এরশাদের মসনদ। এরপর এরশাদ ৪ ডিসেম্বর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। দুদিন পর ৬ ডিসেম্বর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে বিদায় নেন এরশাদ। শেষ হয় তার নয় বছরের সামরিক শাসন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে থাকে। আওয়ামী লীগ দিবসটি গণতন্ত্র মুক্তি দিবস ও স্বৈরাচার পতন দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নব্বই পরবর্তী তিন দশকে আওয়ামী লীগ, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছে। ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব পেয়ে তাঁর সরকার বিচারহীনতার সংস্কৃতি বন্ধ করে দেশে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
Leave a Reply