রাষ্ট্রায়ত্ব ৬ টি চিনিকল বন্ধের সিদ্ধান্তে আইন ও সালিশ কেন্দ্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, একটি বিশেষ মহলের স্বার্থ হাসিলের জন্য এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে মনে করেন শ্রমিকরা।
মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অব্যাহত লোকসান কমাতে গত ১ ডিসেম্বর (২০২০) দেশের ১৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলের মধ্যে ৬টি চিনিকল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন। এ ৬টি চিনিকল হলো পাবনা সুগারমিল, শ্যামপুর সুগারমিল, পঞ্চগড় সুগারমিল, সেতাবগঞ্জ সুগারমিল, রংপুর সুগারমিল ও কুষ্টিয়া সুগারমিল।
আখ কাটার ভরা মৌসুমে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোতে আখ মাড়াই ও উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করার কারণে লাখ লাখ একর জমিতে উৎপাদিত আখ নিয়ে দেশের আখ চাষিরা মহাবিপদের সম্মুখিন হয়ে পড়েছে এবং হাজার হাজার চিনিকল শ্রমিকও বেকার হয়ে পড়েছে। হঠাৎ করে এভাবে চিনিকলগুলো বন্ধ হওয়ার ফলে আখচাষি ও শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। বেসরকারি চিনিকলগুলো লাভজনক হলেও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে কেন লোকসান হচ্ছে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আসক বলে, অভিযোগ রয়েছে এর জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে না পারা, আখের স্বল্পতা, বহু পুরনো যন্ত্রপাতির সাহায্যে উৎপাদন, আখ প্রক্রিয়াজাতকরণে অদক্ষতা, দুনীর্তি ও পরিকল্পিত বিপণন ব্যবস্থার অভাব। এ প্রক্রিয়ায় দেশের চিনি সিন্ডিকেটকে অধিক মুনাফার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত এক দশকে চিনিকলের লোকসান কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু বেশিরভাগ নির্দেশ বাস্তবায়িত হয়নি। একটি মহলের স্বার্থ হাসিলের জন্য এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে আন্দোলনরত শ্রমিক ও শ্রমিক নেতারা দাবি করছেন।
আসক মনে করে, সংশ্লিষ্ট চিনিকলগুলোর বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান না করে এবং আধুনিকায়নের জন্য যথাযথ প্রচেষ্টা না নিয়ে এভাবে বন্ধ করে দেওয়া অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত। ৬টি রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকল বন্ধের মতো অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের মাধ্যমে কীভাবে চিনিকলগুলো লাভজনক করে তোলা যায় তা খতিয়ে দেখার এবং কমিটির সুপারিশসমূহ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করার আইন ও সালিশ কেন্দ্র আহ্বান জানাচ্ছে।
Leave a Reply