আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই, বহুল আলোচিত বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে নিয়ে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন ফেনী আ’লীগের তিন নেতা। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে ফেনী পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী কাদের মির্জার উদ্দেশে বলেন, ‘কাদের মির্জা ১০ হাজার ভোটের মেয়র। আমার ফেনী পৌরসভায় একটি ওয়ার্ডে ১০ হাজার ভোটার রয়েছে। তিনি এমন কী নেতা হয়েছেন যে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের বিরুদ্ধে কথা বলেন। জাতীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেন। একটা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার হওয়ার ক্ষমতা নেই। কিসের এত দম্ভ? আগে তো গরু চুরির মামলায় জেল খেটেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে ফেনী শহরের একটি রেস্তোরাঁয় যৌথ এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজক নেতারা এসব কথা বলেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ সভাপতি দিদারুল কবির রতন এবং ফেনী পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেলে রক্ষা পাবেন না কাদের মির্জা। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও নিজাম উদ্দিন হাজারীর বিরুদ্ধে আবার কথা বললে তাকে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে ফেনীতে মহাসড়ক অবরোধ করা হবে। কাদের মির্জা যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের নামে বিদেশে পালিয়ে থাকা বিএনপির নেতা তারেক রহমান ও জামায়াতের নেতাদের সাথে যোগাযোগ করেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তারেক রহমানের সাথে তিনি মিটিং করেন। ভবিষ্যতে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদের আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিশ্চিত করার শর্তে তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের সমালোচনা করছেন। তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার, দলীয় ও প্রশাসনিকভাবে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানাই।’
সম্মেলনে দিদারুল কবির রতন বলেন, ‘কাদের মির্জা অপরাজনীতির কথা বলে। অথচ তিনি যুবলীগ-ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল করেন। কমিটি বাতিল করার তার কী ক্ষমতা। আওয়ামী লীগ তথা ওবায়দুল কাদেরকে অপ্রিয় করতে এ কাজ করছেন। বসুরহাট পৌরসভায় কোনো টেন্ডার হয় না। ২০ থেকে ২২ শতাংশ কমিশন নিয়ে সব করছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘পাগলা মিয়ার পবিত্র মাটিতে পা রাখতে পারবা না। এখানে রাজনীতির চেইন অব কমান্ড আছে। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন খালেদা জিয়াও ফেনীতে পা রাখতে পারেনি। কাদের মির্জা পালানোর পথ খুঁজে পাবে না। তোমার মাতলামি ফেনীর জনগণ পরোয়া করে না। ছেলে তাসিক মির্জাকে দিয়ে বসুরহাটে বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে। সেখানে অস্ত্রের নেতৃত্ব দেয়। তিনি মাদকের বড় চোরাকারবারি।’
এ ছাড়াও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার ওপর কাদের মির্জার নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন তিনি।
নোয়াখালীর প্রশাসনের উদ্দেশে দিদারুল কবির রতন বলেন, ‘মির্জার নির্দেশে কোনো নেতা-কর্মীকে হয়রানি করবেন না। তাহলে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। দাগনভূঞার কোনো লোকের সাথে অসদাচরণ করা হলে প্রয়োজনে দাগনভূঞাবাসী কোম্পানীগঞ্জ ঘেরাও করবে।’
এ দিকে কাদের মির্জা পরবর্তীতে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, নিজাম উদ্দিন হাজারীকে বিষোধগার করলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করার হুমকি দেন দিদারুল কবির।
Leave a Reply