1. admin@banglahdtv.com : Bangla HD TV :
বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৭:২০ অপরাহ্ন

সালথার সহিংসতায় কী পেয়েছে তদন্ত কমিটি?

ডেস্ক রিপোর্ট
  • Update Time : রবিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২১
  • ৩৮৫ Time View

ফরিদপুরের সালথায় ৫ এপ্রিল রাতে সহিংসতার ঘটনায় জেলা প্রশাসনের গঠিত দু’টি তদন্ত কমিটি রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এর মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল সহিংসতায় ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করতে। অপর কমিটির দায়িত্ব ছিল সহিংসতার কারণ খুঁজে বের করা। তা ছাড়া কারা এ হামলার সাথে জড়িত তা চিহ্নিত করার পাশাপাশি এ ধরনের সহিংসতারোধে করণীয় বিষয়ে সুপারিশ করার কথা ছিল প্রতিবেদনে। দু’টি কমিটিই নির্ধারিত সময়ে ও একই দিনে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে কী আছে ওই প্রতিবেদন দু’টিতে?

ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে গঠিত কমিটি ক্ষতিগ্রস্ত সংশ্লষ্টদের বক্তব্য গ্রহণ করেছে। তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ওই রাতের হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এই কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: আসলাম আলী মোল্যার নেৃতত্বে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি রোববার জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।

এ কমিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়সহ তাদের দু’টি সরকারি গাড়ি ও বাসভবনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে।

নাম প্রকাশ না করে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সবমিলিয়ে ওই ঘটনায় প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে। ওই দিনের হামলায় যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসি ল্যান্ডের সরকারি যে দু’টি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়, এর দামই ছিল প্রায় এক কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এ ছাড়া কম্পিউটার, ল্যাপটপ, চেয়ার, টেবিল, দরজা জানালা, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, প্রকল্প কর্মকর্তার গুদামে রাখা খাদ্য সামগ্রিসহ পুড়ে যাওয়া অন্য আসবাবপত্রের হিসাবও এতে এসেছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, হামলায় তাদের প্রায় চার লাখ ২৮ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। একইভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের অন্যান্য দফরেরও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করা হয়েছে পৃথকভাবে।

হামলার কারণ ও হামলাকারীদের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি
ওই সহিংসতার কারণ, বিস্তার ও ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ তুলে ধরতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাসলীমা আলীকে প্রধান করে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। রোববার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অতুল সরকারের কাছে ওই কমিটিও তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নয় সদস্যের ওই কমিটির প্রধান।

জানা গেছে, ওই কমিটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য গ্রহণ করেছে। তবে তদন্তে কী পেয়েছেন তারা, কারা এ হামলা চালিয়েছে, কেন চালিয়েছে- এ ব্যাপারে কিছু জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তদন্ত কমিটির প্রধান তাসলীমা আলী।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার তদন্ত প্রতিবেদন দু’টি হাতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে এতে কী আছে তা প্রকাশ না করলেও তিনি জানান, এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

আটক ৮০, রিমান্ডে ৪৮
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী পুলিশ ওই রাতের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় এ পর্যন্ত ৮০ জনকে আটক করেছে। এদের মধ্যে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে ৫৪ জনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে ৪৮ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

কেন এ সহিংসতা?
৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা মারুফা সুলতানা খান হিরামনি লকডাউন কার্যকরে অভিযানে যান সোনাপুর ইউনিয়নের ফুকরা বাজারে। এ সময় সাধারণ জনতার ওপর লাঠিচার্জ ও অসদাচরণের অভিযোগে গ্রামবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে ভূমি কর্মকর্তাসহ অভিযানকারীদের ধাওয়া করে। পরে পুলিশ এলে তাদেরকেও কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়।

এরপর থানা ঘেরাও করে গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, ভূমি অফিস, দু’টি সরকারি গাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ সরকারি বাসভবন ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ভাঙচুর করা হয়।

৫ মামলায় আসামি ৪ হাজার
এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে এলাকার তিন থেকে চার হাজার মানুষকে। এর মধ্যে প্রায় শতাধিক ব্যক্তির নামোল্লেখ করা হয়েছে। অনেক নিরীহ ব্যক্তি ও ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা ছিলেন না এমন ব্যক্তিদেরও এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই সহিংসতার পর পুরো এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। গ্রেফতার এড়াতে গ্রাম ছেড়েছেন সবাই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 banglahdtv
Design & Develop BY Coder Boss