বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, মুক্ত পরিবেশ ছাড়া মুক্ত সাংবাদিকতা করা যায় না। দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নেই বলেই আজ সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সাগর-রুনিসহ ৩৫ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন এসরকারের আমলে। কিন্তু কোনো বিচার হয়নি। আজ যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প দেখছি না।
আজ বুধবার দুপুরে প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে তিনি এসব বলেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, রোজিনা ইসলাম সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার লিখনী চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তার লেখনীর কারণে দুর্নীতিবাজরা আতঙ্কে থাকত। তাই অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে তার ওপর এ নির্যাতন চালানো হলো। রোজিনার মতো অনুসন্ধানী সাংবাদিকের উপর যে নিপীড়ন চালানো হয়েছে ও হচ্ছে এর নিন্দা জানানোর ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। আজ সাংবাদিকরা প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন। এ প্রতিবাদ অব্যাহত থাকুক সেই প্রত্যাশা থাকবে। সাগর-রুনি আন্দোলনের মতো যেন মাঝ পথে যেন আন্দোলন থেমে না যায় সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, সংবিধানের ৩৯ ধারায় প্রদত্ত নাগরিকের অধিকার হলো স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ ও খবর প্রচার করা। খবরের ব্যাখ্যা এবং প্রকাশিত খবর ও মতের বিশ্লেষণ করাও এর অন্তর্ভুক্ত। এ জন্য দরকার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ ও পরমতসহিষ্ণুতা। নাগরিকের এ অধিকার সংরক্ষণের জন্য মুক্ত পরিবেশ ও আইনি ধারামুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। এটা করার প্রাথমিক দায়িত্ব রাষ্ট্রের ও সরকারের। কিন্তু ফ্যাসিবাদী সরকার কখনো সেটি করবে না। এটা আদায় করে নিতে হবে। না হয় সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ হবে না।
তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, মামলার যে দৃশ্য বাংলাদেশে দেখা যায় তাতে স্পষ্ট যে, যারা ক্ষমতাধর তারা সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে চান। এর মধ্যে প্রশাসনের লোকজন যেমন আছেন, আছেন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, স্থানীয় মাসলসম্যানও। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের স্পর্ধা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর ফলে দুর্নীতি দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।
জনাব ইশরাক বলেন, সরকারকে যদি গণতান্ত্রিক হতো তাহলে মতপ্রকাশের এবং সাংবাদিকতার স্বাধীনতাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিত। কিন্তু এই সরকারতো গণতান্ত্রিক সরকার নয়। এরা মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে ক্ষমতায় এসেছে। কাজেই এদের কাছে কখনো ন্যায় বিচার, মানবতা, মুক্ত সাংবাদিকতা আশা করা যায় না।
তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, এম এ আজিজ, নুরুল আমিন রোকন, কবি আবদুল হাই শিকদার, ইলিয়াস খান, শহিদুল ইসলাম, সৈয়দ আবদাল আহমদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, সাবেক সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী, বিএফইউজের সহ-সভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ডিইউজের সহ-সভাপতি শাহীন হাসনাত ও রাশেদুল হক, সাংবাদিক নেতা আমীরুল ইসলাম কাগজী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাব এডিটর কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হৃদয়, কারা নির্যাতিত ফটো সাংবদিক শফিকুল ইসলাম কাজল, ডিইউজের দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, সাংবাদিক নেতা সাখাওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী। মানবন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ খায়রুল বাশার, সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশীদ আলম, দফতর সম্পাদক তোফায়েল হোসেন, নির্বাহী সদস্য আব্দুস সেলিম, একেএম মহসীন, জাকির হোসেন, ডিইউজের সাবেক সহ-সভাপতি সৈয়দ আলী আসফার, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য জেসমিন জুঁই প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিইউজের কোষাধ্যক্ষ গাজী আনোযারুল হক।
Leave a Reply