এদিন দুপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘চন্দ্রিমা উদ্যানের জিয়ার কবরে যে মারামারি করলো বিএনপি, বিএনপি জানেনা যে, সেখানে জিয়ার কবর নাই? জিয়া নাই ওখানে? জিয়ার লাশ নাই? তারা তো ভালোই জানে। তাহলে তারা এতো নাটক করে কেন??
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়া কি বলতে পারবে যে তার (তারেক জিয়ার) বাবার লাশ দেখেছে? গুলি খাওয়া লাশতো দেখাই যায়! তারা কি দেখেছে কখনো? বা একটা ছবি দেখে কেউ? দেখেনি। ওই বাক্সের ফাঁক থেকে যারা দেখেছে একটু, সেই এরশাদের মুখ থেকে শোনা যায়, যে কমব্যাট ড্রেস পরা। জিয়াউর রহমান তখন প্রেসিডেন্ট, তখনতো সে কমব্যাট ড্রেস পরেনা। এটা কি বিএনপির লোকেরা জানেনা। তাদের মারামারি, ধ্বস্তাধস্তি করার চরিত্র তো এখনো যায়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, যিনি অত্যন্ত নিশিরাতের ভোটের মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, তিনি আজকেও আবার বিষোদগার করেছেন। আমাদের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ও তার মাজার সম্পর্কেও কথা বলেছেন। তার ৭১ সালের যুদ্ধের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেছেন। এটা একটা হাস্যকর বক্তব্য। এ বক্তব্যগুলো থেকেই প্রমাণিত হয়, এরা কতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ। তারা স্বাধীনতা যিনি ঘোষণা দিলেন, তার ন্যূনতম যে স্বীকৃতি সে স্বীকৃতিকেও দিতে নারাজ। আজকে এই কথাই ঐতিহাসিকৎভাবে সত্য, এটা দিবালোকের মতো সত্য, যে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তিনি রণাঙ্গনে থেকেই যুদ্ধ করেছেন, রণাঙ্গনে থেকেই যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন।’
একুশে আগস্টের চক্রান্তমূলক গ্রেনেড হামলা বিষয়ক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় ফখরুল এসব কথা বলেন। ইতিহাস কথা কয় শিরোনামে ভার্চুয়াল আলোচনার আয়োজন করে বিএনপি।
সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একুশে আগস্ট যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের প্রথম সোপান ছিল সে বিষয়টি আলোচকরা অত্যন্ত স্বার্থকভাবে তুলে ধরেছেন। প্রকৃতপক্ষে একুশে আগস্ট একটি সুদূরপ্রসারী চক্রান্ত- বাংলাদেশকে আবার গণতন্ত্রহীন করার জন্যে, বাংলাদেশে মানুষের স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়ার জন্য সেই একুশে আগস্ট। একুশে আগস্ট এবং এক এগারো সেজন্যই কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এক এগারো ঘটনার জন্যে একুশে আগস্ট ছিল প্রাথমিক একটা চক্রান্ত। ঝুঁকিটা খুব বড় ছিল। দুর্ঘটনা বলুন, ঘটনা বলুন আমরা এর ঘোরতর বিরোধী। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সব সময়ই যে কোন রকম হত্যা অন্যায় এবং সংঘাতের বিরোধী একটি রাজনৈতিক দল।’
পুরো আলোচনা সারাংশ টেনে ফখরুল বলেন, ‘একুশে আগস্ট ছিল সম্পূর্ণভাবে একটা সাজানো নাটক এবং এ সাজানো নাটকের ফলেই আজকে আওয়ামী লীগ কিন্তু ক্ষমতায় বসে আছে। সেজন্যই আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি ওই ঘটনার বেনিফিশিয়ারি আওয়ামী লীগ। সেজন্যই তারা এ ঘটনাকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে জনগণের দৃষ্টিকে বিভ্রান্ত করতে চায়।’
আলোচনা সভায় বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নূল আবেদীন একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার আইনগত ভুল ও জটিলতাগুলো তুলে ধরেন। ওই ঘটনার রাজনৈতিক ও তৎকালীন প্রেক্ষাপটের বিস্তারিত সব তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
Leave a Reply