এবার আর সেই চিরচেনা ঢিলেঢালা পাঠান স্যুট আর পাগড়িতে নয়। ‘ক্যামোফ্লেজ ব্যাটল ফেটিগ’ আর বুলেটপ্রুফ ভেস্ট’ পরা, চোখে সানগ্লাস, মাথায় ‘ব্যালাস্টিক হেলমেট’ এবং হাতে অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল। বলা হচ্ছে তালেবানের নয়া কমান্ডো বাহিনীর সদস্যদের কথা। মার্কিন এলিট ফোর্সের মতো ভয়ঙ্কর বেশভূষা নিয়ে কাবুলের রাস্তায় টহল দিচ্ছে তারা।
জানা গেছে, তাদের পোশাকি নাম ‘বদর-৩১৩ ব্যাটালিয়ন’। ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধের চেতনায় তালেবানরা তাদের বাহিনীর নামকরণ করেছে। ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ৩১৩ জন যোদ্ধা নিয়ে মদিনার অদূরে বদর উপত্যকায় বিশাল কুরাইশ বাহিনীকে যুদ্ধে পরাজিত করেছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। ঐতিহাসিক সেই যুদ্ধের স্মরণেই করা হয়েছে এই বাদরি বাহিনী। তবে তালেবানদের এই সংখ্যা ৩১৩ নয়, কয়েক হাজার বলে মনে করা হচ্ছে।
একজন মার্কিন সেনা জানিয়েছেন, বেশ কিছু অস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে। তবে অধিকাংশ অস্ত্রই অক্ষত রয়েছে। যা কিনা দখল করে নিয়েছে তালেবানরা।
জানা গেছে, তালেবানরা শহরটি দখলে নেয়ার পর তাদের কর্মীরা রাস্তায় টহল দিচ্ছে। আফগান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, তাদের নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এএফপি’র প্রতিবেদন বলছে, তালেবানদের প্রায় ছয় হাজার সশস্ত্র যোদ্ধা কাবুলের রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে। কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ বেশ কিছু জায়গায় একদম ভিন্ন এক বাহিনী নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। তারা দেখতে অনেকটাই মার্কিন এলিট ফোর্সের মতো। তাদের বিশেষ ধরনের অভিযানে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এমনকি আত্মঘাতী হামলার মতো জটিল অপারেশনও করে থাকে। বর্তমানে কাবুলের যে সকল জায়গায় বিশেষ নজর দেয়া প্রয়োজন সেসব জায়গাতেই দেখা মিলছে তাদের। বিশেষ এই বাহিনীর পোশাকি নাম ‘বদর-৩১৩’।
চলতি সপ্তাহে তালেবানের পক্ষ থেকে এই ‘স্পেশাল কমান্ডো ফোর্স’র বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এতে তাদের শারীরিক কসরত এবং অস্ত্র প্রশিক্ষণ-পর্ব দেখানো হয়েছে। আধুনিক অস্ত্রের পাশাপাশি, হাল আমলের ‘ম্যানপ্যাক’, ‘নাইট ভিশন’ এমনকি, গ্যাস মুখোশও রয়েছে। এসব ছবি ও ভিডিও প্রকাশের পরই তা ভাইরাল হয়।
তালেবানের দাবি, আফগানিস্তানের পাহাড়ি অঞ্চল এবং মরুভূমিতে যুদ্ধের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত এই বাহিনী। ‘বদর-৩১৩ ব্যাটালিয়ন’কে অস্ট্রিয়ান গ্লক পিস্তল, আমেরিকান এম-৪ কার্বাইন, ব্যারেট স্নাইপার রাইফেল, কাঁধে তুলে ছোড়ার উপযুক্ত আনজা সিরিজের বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রও তারাই জুগিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বদরি ৩১৩ সাধারণ তালেবান যোদ্ধাদের মতো নয়। ছদ্মবেশ, যুদ্ধের বুট এবং বডি বর্ম দিয়ে তাদের মার্কিন সৈন্যদের মতো দেখানোর জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এলিট সৈন্য। সূত্র : এফপি, ফান্স২৪, দ্যা সিয়াসাত ডেইলি
Leave a Reply