‘প্রেমিকার’ সাথে কোনো কারণে অভিমান করে প্রথমে কীটনাশক পান করেন প্রেমিক যুবক। আরো অভিমান বুকে জড়ো হলে এবার প্রেমিকার চোখের সামনেই নিজের বুকে ছুরি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এমন প্রেমিকও আছে এ যুগে !!
হ্যা, এমন অদ্ভুত ঘটনাই ঘটেছে রাজশাহী নগরীর একটি রেস্তোরাঁয়। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় ‘মাস্টার শেফ’ রেস্তোরাঁয় এ ঘটনা ঘটে।
আত্মহননের পথ বেছে নেয়া যুবকের নাম বুলবুল আহমেদ (২৬)। তিনি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বিড়ালদহ নয়াপাড়া গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে। বুলবুল একজন ফার্নিচার ব্যবসায়ী ছিলেন।
রেস্তোরাঁয় ওই ঘটনার সময় বুলবুলের ‘প্রেমিকা’ তুলি খাতুন (২০) ছাড়াও তার বান্ধবী জেমি আক্তার (২০) উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ জানায়, বুলবুল অবিবাহিত ছিলেন। আর তুলি ছিলেন বিবাহিতা। তার সন্তান রয়েছে। তুলির সঙ্গে বুলবুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তুলির বাড়ি পুঠিয়া উপজেলার তারাপুর গ্রামে। বাবার নাম আবদুর রহিম। তার বান্ধবী জেমি আক্তার নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার জাহানপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে। তারা দু’জনই রাজশাহী সরকারী সিটি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের দু’জনকেই পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
এদিকে, পুলিশ হেফাজতে নেয়ার আগে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তুলি কোন কথা বলতে চাননি। তবে তুলির বান্ধবী জেমি জানান, রেস্তোরাঁয় প্রথমে বুলবুল কীটনাশক পান করেন। এরপর নিজের বুকে নিজেই ছুরি চালান।
এরপর তারা তাকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক বুলবুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
রেস্তোরাঁর মালিক শিহাব রুম্মান দাবি করেন, ঘটনাটি ঘটেছে তার রেস্তোরাঁ কম্পাউন্ডের বাইরে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হতে পুলিশ ওই রেস্তোরাঁয় থাকা সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ বের করে যাচাই-বাছাই করছে।
তিনি জানান, ওই প্রেমিকযুগল কাচ্চি বিরিয়ানির পার্সেল অর্ডার করেছিলেন। খাবার পার্সেল নিয়ে যাওয়ার সময় রেস্তোরাঁর এক বয়কে ৩০ টাকা বকশিসও দিয়েছেন। আর রেস্তোরাঁ থেকে বের হওয়ার পরেই এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, দুপুরের দিকে এই প্রেমিকযুগল ‘মাস্টার শেফ’ রেস্তোরাঁয় যান। তারা বিরিয়ানি অর্ডার করেন। এক পর্যায়ে কোনো এক অভিমানে প্রেমিকার সামনেই প্রথমে বিষপান করেন বুলবুল। এরপর ওই প্রেমিক যুবক নিজেই নিজের বুকের বাম পাশে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। এর পরপরই নিচে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বুলবুলকে রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক বুলবুলকে মৃত ঘোষণা করেন। এখন তার লাশ হাসপাতালেই রয়েছে।
ওসি আরো বলেন, এখন রেস্তোরাঁর সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ বের করে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য আলামত সংগ্রহের মাধ্যমে এ ঘটনার সময় ও স্থান শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে। বুলবুলের লাশ ময়নাতদন্তে পাঠানো হবে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট দুই মেয়েকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রেস্তোরাঁর ফুটেজ যাচাই-বাছাই ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply