বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর প্রয়াত শফিউল বারী বাবুকে সভাপতি ও আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করে ছয় সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করে কমিটি ঘোষনা করে বিএনপি। পরবর্তীতে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ২০২০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর স্বেচ্ছাসেবক দলের ১৪৯ সদস্যের আবার আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।তৃতীয় ধাপে আবার ২০শে এপ্রিল ২০২২ মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিকে ৩৫২ সদস্য বিশিষ্টতে উন্নিত করা হয়। যেখানে মরহুম সভাপতি শফিউল বারী বাবুর স্থলাভিষিক্ত করে ভারমুক্ত করা হয় মোস্তাফিজুর রহমানকে।
সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ২রা আগষ্ট স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রথম সারির ৮৩ জন নেতার মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন।যারই ধারাবাহিকতায় স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হওয়ার পরবর্তী যেকোন সময় ঘোষণা আসতে পারে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটি।
বিভিন্ন মেরুকরণ, হিসাব-নিকাশ, সিন্ডিকেটের লবিং ও গ্রুপিং এ শেষ মুহূর্তের আলোচনায় সভাপতি পদে এগিয়ে আছেন বর্তমান সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার এবং ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলিমুজ্জামান আলিম। আলোচনায় থাকার ব্যাপারে সকলের পক্ষেই সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে বলে তাদের অনুসারীরা মনে করে থাকেন, যেটা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নিয়ামক ভূমিকা পালন করতে পারে।
মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়ে তার অনুসারিরা বলেন, তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত এবং সংগঠনের কাঠামো তৈরি করতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। তার সময়কালে তিনি সারা বাংলাদেশে কমিটি গঠন করতে কার্যকারী ভূমিকা রেখেছেন, যার পুরুস্কার হিসেবে তিনি পুনরায় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেতে পারেন।
বর্তমান সাধারন সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল ছাত্রদল করার সময়কাল থেকে বিভিন্ন সময়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে দল গঠনের বিভিন্ন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং যার কারণে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিশ্বস্ত হিসেবে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদকও নির্বাচিত হন। এছাড়াও তিনি একটা প্রভাবশালী বলয়ের মাঠের নেতৃত্ব প্রদান করে থাকেন। তাছাড়া তিনিও স্বেচ্ছাসেবক দলের সারা দেশের কমিটি গঠন প্রক্রিয়ার সফলতার দাবিদার এবং রাজনীতির মাঠে তারকা ও অভিজ্ঞ প্রার্থী।
বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার ছাত্রদল থেকে বেড়ে ওঠা নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক মাঠে ক্লিন ইমেজধারী এবং পরিক্ষিত। যার কারনে তার অনুসারীরা আশাবাদী ।
কেন্দ্রীয় বিএনপির বর্তমান সহ প্রচার সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলিমুজ্জামান আলিম ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিশ্বস্ত ও পরিক্ষিত নেতা। যার ফলস্বরূপ তিনি বিগত সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জের একটি আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সর্বশেষ যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সভাপতি পদে আলোচনায় থাকার পরেও দল তাকে দায়িত্ব দেননি। টানা ছয় বছর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিকে নেতৃত্ব দেওয়া নেতাদের পুনরায় দায়িত্ব না দেওয়ার বিষয়টি যদি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমলে নিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আলিম আসন্ন স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে তারকা প্রার্থী। তাছাড়াও জুয়েলের মতো আলিমও একটা প্রভাবশালী বলয়ের বিশ্বস্ত অংশীদার।
স্বেচ্ছাসেবক দলের বর্তমান নেতৃবৃন্দের মধ্যে সাধারন সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি এস,এম জিলানী। সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ঝিনাইদহ ও এস,এম জিলানী গোপালগঞ্জ এর একটি আসনে বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। উভয়ই বিভিন্ন প্রভাবশালী বলয়ের বিশ্বস্ত অংশীদার। নতুন নেতৃত্ব বিকশিত করার বিষয়টিকে যদি গুরুত্ব দেওয়া হয় কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে তবে তাদের বিষয়টি প্রাধান্য পাবে।
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় আছেন ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল করিম আবেদ।যার পক্ষে নোয়াখালীর প্রভাবশালী একটা বলয় জোর লবিং তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক দলের বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলী বিভিন্ন সময়ে মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন।
তারকা প্রার্থী হিসেবে সবচেয়ে আলোচনায় আছেন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যদি ঢাকা মহানগর থেকে বেড়ে উঠা নেতৃত্বকে কমিটি গঠনে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন তবে হাবিব সাধারণ সম্পাদকের দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন। এছাড়াও হাবিব বিএনপির প্রভাবশালী একটা বলয়ের বিশ্বস্ত অংশীদার।
এছাড়াও ঢাকা মহানগর বিএনপির প্রভাবশালী এক নেতার অনুসারী হিসাবে পরিচিত মাদারীপুরের একটি আসনে বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ এর প্রার্থী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সম্পাদক এবং ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন স্বেচ্ছাসেবকদল এর বিভিন্ন কর্মসুচিতে তার উপস্থিতি উক্ত পদের একজন প্রার্থী হিসাবে আলোচনায় উঠে আসছে। তার অনুসারিরা অনেক আশাবাদী।
সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের দ্বিতীয় যুগ্ম সম্পাদক সাদরেজ জামান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি রংপুর ও খুলনা বিভাগের টিম প্রধান আসাফ কবির চৌধুরী শত এবং আলহাজ্ব মোঃ জামির হোসেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক এবং প্রথম যুগ্ম সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ দপ্তর সম্পাদক নাজমুল হাসান এবং সহ সাধারণ সম্পাদক কাজী ইফতেখারুজ্জামান শিমুল সহ প্রমুখ ।
Leave a Reply