স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বিএনপির জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সুবর্ণজয়ন্তীর পুরো বছর জনগণের কাছে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরবে বিএনপি। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার জন্য। শনিবার সকালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে চিকিৎসা ও সেবা কমিটির এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমারা সারা বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের কর্মসূচি করে জনগণের কাছে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরব। আমাদের বার্তা হলো, মুক্তিযুদ্ধের মূল ইতিহাস, সত্যিকার ইতিহাস। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, গত এক যুগ ধরে বাংলাদেশে শুধু একটি দল ফ্যাসিস্ট কায়দা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে, স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করছে বর্তমান প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার জন্য। সেজন্য আমরা প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে চাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘একটি সংগ্রাম, একটি আন্দোলন আর একটি মুক্তিযুদ্ধ এক কথা নয়। মুক্তিযুদ্ধ বা যেকোনো যুদ্ধ একটা সময়ে শুরু হয়, একটা সময়ে শেষ হয়। মুক্তিযুদ্ধ বা যেকোনো যুদ্ধ অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষকে যখন আক্রমণ করা হয় বা অস্ত্রের সাহায্যে প্রতিরোধ করা হয় তখনই যুদ্ধ শুরু হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সেভাবেই শুরু হয়েছিল। ২৫ মার্চের কালোরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশে গণহত্যা শুরু করে, তখন কিন্তু রাজনীতিবিদদের জনগণের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। সেই রাতে চট্টগ্রামে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একজন মেজর যিনি সাহসী এবং কী পরিমাণ দেশপ্রেমিক হলে তিনি সেই দিন তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই ২৫ তারিখ শেষ রাতে ড্রামের ওপর দাঁড়িয়ে রিভোল্ট করেছিলেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। যারা ইতিহাস বিকৃত করেন তারা কি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে রিভোল্ট করেছেন, জিয়াউর রহমানের বাইরে এমন আরেকজনের নাম বলতে পারবেন? পারবেন না।’
তিনি বলেন, ‘’৭৫ সালে যেমনিভাবে বাকশাল গঠন করে গণতন্ত্র হত্যা করেছে তেমনিভাবে আজকে তারা ১২ বছর যাবত গণতন্ত্রকে হত্যা করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে আছে। আজকে অর্থনীতি ঠিক একইভাবে লুট হচ্ছে, ব্যাংক লুট হচ্ছে, শেয়ারবাজার লুট হচ্ছে,..। হেন কোনো অকর্ম নাই, হেন কোনো খারাপ কাজ নাই এখন হচ্ছে না।’
সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যদি আমরা ৫০ বছরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পর্যালোচনা করি তাহলে দেখা যায় আওয়ামী লীগ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে যায়। আর বিএনপি সকল ক্ষেত্রে দেখা যায় সফলতা। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে এই গণতন্ত্রের আন্দোলন, অর্থনৈতিক মুক্তির আন্দোলনে, সামাজিক সাম্যের আন্দোলনে এবং রাজনৈতিক সাম্যের আন্দোলনে সকল ক্ষেত্রে যদি আমরা প্রকৃত ইতিহাস আজকে তুলে ধরি তাহলে আওয়ামী লীগ সেখানে ব্যর্থ, বিএনপি সেখানে সফল। সেজন্য বিএনপির নাম শুনলে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম শুনলে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নাম শুনলে, তারেক রহমান নাম শুনলে আওয়ামী লীগের গাত্রদাহ শুরু হয়, কম্পন শুরু হয়। এই দুর্বলতাকে ঢাকার জন্য তারা প্রকৃত ইতিহাসকে বিকৃত করে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে চায়।’
চিকিৎসা ও সেবা কমিটির সদস্য ড্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক হারুন আল রশিদের সঞ্চালনায় আলোচনাসভায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, ড্যাবের এমএ সেলিম, জহিরুল ইসলাম শাকিল,শহিদুল আলম, পারভেজ রেজা কাঁকন, সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, মেহেদি হাসান, সম্মলিত পেশাজীবী পরিষদের শামীমুর রহমান শামীম, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, এসএম জাহাঙ্গীর, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, মৎস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
Leave a Reply