1. admin@banglahdtv.com : Bangla HD TV :
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন

একটি ওটি লাইটের দাম ৮০ লাখ টাকা!

Coder Boss
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২০
  • ৪২৬ Time View

রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ও অধ্যাপক (চলতি দায়িত্ব) ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।

হাসপাতালের কার্যাদেশ থেকে দেখা যায়, কেনা হয়েছে ৮টি ওটি লাইট। এতে ব্যয় হয়েছে ৬ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।  অর্থাৎ, প্রতিটি ওটি লাইট কেনার জন্য ব্যয় করা হয়েছে ৭৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা দরে।

অন্যরা হলেন- হাসপাতালের বাজারদর কমিটির চার সদস্য নিউরো সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৌমিত্র সরকার এবং নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান ডা. রতন দাশগুপ্ত।

বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগনামায় বলা হয়েছে, উপরিল্লেখিত ৩ জনের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা, ১৯৭৯ পরিপন্থী এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ (খ), ও ৩ (ঘ) বিধি মোতাবেক অসদাচরণ ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হলো। একই সঙ্গে কেন বিধিমালার অধীনে যথোপযুক্ত দণ্ড প্রদান করা হবে না সে বিষয়ে নোটিশ প্রাপ্তির ১০ কর্ম দিবসের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের নিকট কারণ-দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়। এছাড়া ব্যক্তিগত শুনানি চাইলে তাও জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়।

অভিযোগনামা সূত্র মতে, হাসাপাতালের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ক্রয়কারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে হাসপাতালের জন্য ৮টি অপারেশন থিয়েটার (ওটি) লাইট (দাম ৮০ লাখ টাকা) প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে ক্রয় করা হয়েছে।  এক্ষেত্রে সরকারের ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৬৪ হাজার টাকা অর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে।

একই সঙ্গে অর্থবছরে ২টি কোবলেশন মেশিন প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে ক্রয় করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ৭৮ লাখ টাকার অর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে। এছাড়া একই অর্থবছরে ২টি এ্যানেসথেশিয়া মেশিন প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে ক্রয় করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ১ কোটি ১৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা অর্থিক ক্ষতি করা হয়েছে।

এসব আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের ৬ কোটি ৪০ লাখ ৩১ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করেন কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত সচিব মো. ইসমাইল হোসেন, কমিটির সদস্য যুগ্ম সচিব শাহিনা খাতুন এবং উপসচিব হাসান মাহমুদ। এরপর তদন্ত প্রতিবেদনটি অজ্ঞাত কারণে আলোর মুখ দেখেনি। যদিও চলতি সপ্তাহে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক তদন্ত প্রতিবেদন অনুমোদন করেন।  আর বৃহস্পতিবার আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান।

সূত্র মতে, তদন্ত কমিটি ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর হাসপাতাল পরিদর্শন করে। এ সময় অভিযোগ ও কাগজপত্র পরীক্ষা করা হয় এবং হাসপাতাল পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য নেয়া হয়। তদন্ত কমটি ক্রয় পরিকল্পনার সঙ্গে সংযুক্ত তালিকায় দেখেন, ওটি লাইটের চাহিদা রয়েছে ২০টি। আরসিএস এন্টারপ্রাইজ থেকে দুটি ওটি লাইট কেনা হয় এক কোটি ৫৯ লাখ ৭০ হাজার টাকায়। প্রতিটির ক্রয়মূল্য ৭৯ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

কার্যাদেশ থেকে দেখা যায়, কেনা হয়েছে আটটি ওটি লাইট। এতে ব্যয় হয়েছে ৬ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালে যন্ত্রপাতিসহ একটি কোবলেশন মেশিন কেনা হয় ৯৬ লাখ টাকায়। আরেকটি ২৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকায়। যদিও প্রাইস গাইডলাইনে এর দাম ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৩৯ হাজার ৩০০ টাকা।

এ সংক্রান্ত কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখা গেছে, আরসিএস এন্টারপ্রাইজ থেকে কোবলেশন মেশিন কেনা হয়েছে।

কার্যাদেশে দেখা গেছে, ‘কোবলেশন মেশিন উইথ আল স্ট্রান্ডার্ড এক্সেসোরিস’ একটি কেনা হয়েছে ৯৬ লাখ টাকায়। এর অরিজিন ইউএসএ উল্লেখ করা হয়েছে। আরেকটি কেনা হয়েছে ‘কোবলেশন সিস্টেম ফর ইএনটি সার্জারি’ ২৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকায়। এটিরও অরিজিন ইউএসএ। পরিচালকের বক্তব্য সর্বনিম্ন দরদাতা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে।

প্রাইজলিস্টে ইউনিট মূল্য সর্বোচ্চ ১৬ লাখ টাকা। দুটি মেশিনে মূল্যের বিশাল পার্থক্য রয়েছে।

এ বিষয়ে পরিচালক কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এ দুটি মেশিন কেনায় সরকারের অতিরিক্ত অর্থ অপচয় হয়েছে ৭৮ লাখ টাকা। এ মেশিন কেনার ক্ষেত্রেও তদন্ত কমিটি পরিচালকসহ উল্লিখিত পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার সুপারিশ করেছে।

একইভাবে তৃতীয় অভিযোগে ‘দুটি এনেসথেসিয়া মেশিন ইউথ ভেন্টিলেশন’ কেনায় সরকারের এক কোটি ১৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এক্ষেত্রে কমিটি হাসপাতাল পরিচালক ও বাজারদর কমিটির চার সদস্যের বিরুদ্ধে পৃথক বিভাগীয় মামলা করার সুপারিশ করে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১৬ জানুয়ারি একাউন্টেন্ট নাসিরকে দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত করা হলেও তাকে দিয়ে ওই পদে অফিস করানো হয়েছে।  একজন ওয়ার্ড মাস্টার তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও ও লুটপাটের সুবিধার্থে তাকে লোকাল ওয়ার্ডে ম্যানেজার মেইনটেন্সের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।  এই চক্রটির ভয়ে এই প্রতিষ্ঠানের গত ৬-৭ বছর যাবৎ কোন প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক টেন্ডার প্রসিকিউর হয় না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 banglahdtv
Design & Develop BY Coder Boss