পদ্মা সেতু চালু হলে বদলে যাবে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার আর্থ-সামাজিক অবস্থা। বদলে যাবে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের চাকা। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর দুইপাড়ে সংযোগ সড়কের সঙ্গে চালু হয়েছে সিক্সলেনও। সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি নদীর দুইপাড়ে কল-কারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এ আশায় বুধ বেঁধে আছেন এ অঞ্চলের কৃষক, যুবক, শ্রমিক তথা কর্মজীবী মানুষ।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মধ্যে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা। খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ ও মাগুরা। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলা হলো- বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ঝালকাঠি। ঢাকা বিভাগের ৫ জেলা হলো- গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী। সড়কপথে এই ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটটি ১৯৮৬ সালে চালু হয়। যেটি বর্তমানে মাদারীপুরের বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই নৌরুটে শীতে ঘন কুয়াশা, বর্ষায় তীব্র স্রোতে ও গ্রীষ্মে নাব্য সংকটে নৌযান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ঘাটে আটকাপড়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ আশায় বুধ বেঁধে আছে পদ্মা সেতু চালুর অপেক্ষায়।
পদ্মা নদীর উভয়প্রান্তে এক সময় বলতে গেলে জনশূন্য ছিল। কিন্তু পদ্মা সেতুকে ঘিরে দুই পাড়ের মানুষের জীবনযাত্রার মান পাল্টে যাচ্ছে। সেতুটি চালুর অপেক্ষায় সবচেয়ে বেশি আশায় বুক বেঁধেছেন প্রান্তিক কৃষকরা। রাজধানীর ব্যবসায়ীরা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন তারা।
এদিকে পদ্মা সেতুর সঙ্গে ১৪ কিলোমিটারের সংযোগ সড়ক চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার সিক্সলেন সড়কও চালু করা হয়েছে। এই সেতুকে ঘিরে শেখ হাসিনা তাঁতপল্লী, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শেখ হাসিনা হেলথ টেকনোলজি, শেখ রাসেল আইটি পার্কসহ বেশকিছু মেগাপ্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এসব বাস্তবায়ন হলে পাল্টে যাবে মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের চাকা। কর্মসংস্থান হবে এই অঞ্চলের বেকার যুবকদের।
বহুমুখী পদ্মা সেতু শুধু দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নয়, পুরো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণও বয়ে আনবে বলে বিশ্বাস করেন এই অঞ্চলের মানুষ।
Leave a Reply