কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল দেওয়া নিয়ে কর্মকর্তা সমিতির দুই গ্রুপে হাতাহাতি হয়েছে। এসময় ফুলের তোড়ার ভাংচুর করে লাঠি নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়।
বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে শ্রদ্ধায় শহীদদের স্মরণে ক্যাম্পাসের মুক্তবাংলায় ফুল দেন উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শাহীনুর রহমান। এরপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শাখা সংগঠন ফুল দেওয়ার জন্য আসে।
এই ঘটনায় তাদের নিভৃত করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক লাঞ্ছিত হয়েছেন। এছাড়া শ্রদ্ধাঞ্জলির পুষ্পমাল্য ভেঙে ফেলা ও পায়ে মাড়ানোরও ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বুধবার দুপুরে ক্যাম্পাসস্থ ‘মুক্ত বাংলা’ চত্বরে এসব ঘটনা ঘটে। এর আগেও ১৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিসৌধে কর্মকর্তাদের দু’গ্রুপের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এদিকে, কর্মকর্তা সমিতির কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাঁধা দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পরপরই কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে নিজেদের দুঃখ প্রকাশ ও ভুল স্বীকার করেন এবং সাংবাদিকদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, অফিসার্স এসোসিয়েশনের একাধিক সদস্য জুতা পায়ে বেদিতে ফুল দিতে উঠে। এসময় বিষয়টি প্রত্যক্ষ করে বাঁধা দেয় কর্মকর্তা সমিতির সদস্যরা। পরে মারামারিতে শুরু হয়। এসময় তাদের হাতে বাঁশ ও লাঠি-সোডা দেখা যায়। কর্মকর্তা সমিতির সদস্যরা একপর্যায়ে মুক্ত বাংলা চত্বর থেকে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ ম্যুরাল ও ক্যাম্পাস গেইটে মহড়া শুরু করে এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় তাদের ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা দেন আব্দুল আজিজ, সেলিমসহ কয়েকজন উত্তেজিত কর্মকর্তা।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়ক টেকনিক্যাল কর্মচারী সমিতি ও ফুল দিতে গেলে বাঁধা দেয় সহায়ক কর্মচারী সমিতি। সেখানেও হট্টগোল সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে একে অপরের পুষ্পস্তবক ছিঁড়ে ফেলেন। এসময় সহায়ক কর্মচারী সমিতির সভাপতি আব্রাহাম লিংকন, সহায়ক টেকনিক্যাল কর্মচারী সমিতির কোষাধ্যক্ষ সালেহ আকরাম আকুলসহ কয়েকজন আঘাতপ্রাপ্ত হন বলে জানা গেছে।
এ সময়ে পুলিশ ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণে নিতে চেষ্টা করে। এরপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মো. শাহিনুর রহমান এবং ছাত্রলীগের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, এরকম প্রতি-হিংসাপরায়ণ মনোভাব নিয়ে শহীদ বেদীতে ফুল না দিতে আসাই শ্রেয়। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা।
Leave a Reply