ঢাকা-সিলেট করিডোরে আঞ্চলিক বাণিজ্যের গতিশীলতা ও সড়ক নিরাপত্তার উন্নয়নে মাল্টি ট্রান্স ফিন্যান্সিং ফ্যাসিলিটির (এমএমএফ) আওতায় ১৭৮ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবি।
ম্যানিলাভিত্তিক এ ঋণদাতা সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়, ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়কের কাজ শেষ হলে তা বাণিজ্যের নতুন একটি পথের জন্য সহায়ক হয়ে উঠবে।
এই সড়ক চট্টগ্রাম বন্দরকে তিনটি স্থলবন্দর আখাউড়া, শেওলা এবং তামাবিলের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে যুক্ত করে সেখান থেকে মিয়ানমার এবং ভুটানের সঙ্গেও যুক্ত করবে।
সরকারের ‘নর্থইস্ট বাংলাদেশ ইকোনমিক করিডোর’ এর কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠবে এই করিডোর। যার লক্ষ্য ওই অঞ্চলে জ্বালানি উৎপাদন এবং নির্মাণ সামগ্রীসহ প্রধান শিল্পগুলোর উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে আরও সংহত করা।
দক্ষিণ এশিয়ায় এডিবির পরিবহন বিশেষজ্ঞ সাতোমি সাকাগুচি বলেন, ‘বাংলাদেশের রপ্তানি নির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং পরিবহনের কেন্দ্র হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে এর অনন্য সম্ভাবনাকে তুলে ধরেছে। মসাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) প্রকল্পের আওতায় ৫ নম্বর রোড করিডোরের প্রধান অংশ এই সড়ক। এর উন্নয়ন পণ্য পরিবহনের খরচ কমিয়ে আনবে, প্রতিযোগিতা বাড়াবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রকল্প প্রতিবেশী দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়াবে। সেইসঙ্গে সাধারণ মানুষকেও নিরাপদ প্রবেশাধিকার দেবে। এই বিনিয়োগ প্রকল্প এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সমন্বিত এবং টেকসই উন্নয়নে সরকারের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে।’
সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগের এই অর্থ চারটি ধাপে দেওয়া হবে। প্রথম দফায় এমএমএফ থেকে দেওয়া ৪০ কোটি ডলার জাতীয় মহাসড়ক নম্বর-২ প্রশস্ত করাসহ ঢাকা-সিলেট করিডোর দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত করার প্রধান চুক্তিগুলোর প্রাথমিক কাজগুলোর ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
এর মধ্যে রয়েছে ৬০ কিলোমিটার ফুটপাথ, ২৬টি পদচারী সেতু, ১৩টি ওভারপাস। জলবায়ু এবং দুর্যোগের ঝুঁকিসহ বয়স্ক, নারী, শিশু এবং ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের কথা বিবেচনা করে এসবের নকশা করা হবে।
২৬৯ কোটি ডলারের এই প্রকল্পে সরকার ৯১ কোটি ডলারের তহবিল দেবে। এমএফএফ ছাড়াও টেকনিক্যাল অ্যাসিস্টেন্স স্পেশাল ফান্ড থেকে কারিগরী সহায়তা হিসেবে ১০ লাখ ডলার দেবে এডিবি। এছাড়া দারিদ্র্য কমানোর জন্য জাপান সরকারের অর্থায়নে জাপান ফান্ড থেকে অতিরিক্ত আরও ২০ লাখ ডলার দেওয়া হবে।
এছাড়া সড়কের নিরপত্তা ও ব্যবস্থাপনার জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সক্ষমতা বাড়ানো, জলবায়ু পরিবর্তন, লৈঙ্গিক সমতা এবং সামাজিক অন্তর্ভূক্তিকরণের জন্যও তহবিল দেবে ঋণদাতা সংস্থাটি।
সাসেক সদস্য দেশগুলোতে পরিবহন এবং বাণিজ্য সুবিধাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই অঞ্চলে ২০০১ সাল থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৩টি পরিবহন প্রকল্পে খরচ হয়েছে ১ হাজার ১৪০ কোটি ডলার।
Leave a Reply