1. admin@banglahdtv.com : Bangla HD TV :
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন

ভারতে করোনা মহামারী ‘পূর্ব দিকে এগোচ্ছে’!

বিশেষ প্রতিনিধি
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১
  • ৩৮৩ Time View

ভারতে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে কোভিড শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ও মৃত্যুর ঘটনা – দুইই হু হু করে বাড়তে থাকার পর ‘মহামারি এখন ক্রমশ পূর্ব দিকে এগোচ্ছে’ বলে সে দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়েছে।

আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা, ঝাড়খন্ড ও বিহার – পূর্ব ভারতের এই পাঁচটি রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে ওই রাজ্যগুলোর কর্মকর্তাদের সাথে আপদকালীন বৈঠকের পরই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এ মন্তব্য করা হয়েছে। ওই রাজ্যগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে নেয়া হচ্ছে নানা ব্যবস্থাও।

এদিকে এই সতর্কবার্তা এসেছে এমন একটা সময়ে যখন সারা দেশেও দৈনিক শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা চার লাখ অতিক্রম করে গেছে, মৃত্যুও পৌঁছেছে চার হাজারের কাছাকাছি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার সকালে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় ৪ লাখ ১২ হাজারেরও বেশি নতুন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ৩ হাজার ৯৮০ জন।

গত বছর এই মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে একদিনে এত বেশি নতুন কেস আর এত বেশি মৃত্যু ভারতে কখনো হয়নি।

দুটো পরিসংখ্যানেই একটা বড় ভূমিকা রেখেছে পূর্ব ভারতের পাঁচটি রাজ্য – যদিও এতদিন সবচেয়ে উদ্বেগজনক সংখ্যাগুলো আসছিল মহারাষ্ট্র, দিল্লি, কর্নাটক, কেরালা, পাঞ্জাব বা উত্তরপ্রদেশের মতো দেশের অন্যান্য প্রান্ত থেকেই।

দক্ষিণ, পশ্চিম বা উত্তর ভারতের তুলনায় পূর্ব ভারতের পরিস্থিতি এতদিন ছিল কিছুটা ভালো, কিন্তু তা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে ইঙ্গিত পাওয়ার পরই বুধবার বিকেলে পূর্বের পাঁচটি রাজ্যের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষস্থানীয় আমলা ও বিশেষজ্ঞরা।

পরে বেশি রাতে দিল্লিতে জারি করা এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, ‘যাবতীয় সাক্ষ্যপ্রমাণ এদিকেই দিকনির্দেশ করছে যে কোভিড মহামারী এখন ক্রমশ পূর্ব দিকে এগোচ্ছে।’

‘দেশের (পূর্ব প্রান্তের) এই রাজ্যগুলোতে দৈনিক শনাক্ত কেসের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, যেমন বাড়ছে মৃত্যু হারও,’ জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।

জরুরি ভিত্তিতে পূর্ব ভারতে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে?
গতকালের বৈঠকে পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে মহামারীর ধাক্কা সামলাতে জরুরি কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পদক্ষেপগুলো হলো :

– ওই পাঁচটি রাজ্যকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে সেখানে যে ছাত্রছাত্রীরা ডাক্তারি শিক্ষাক্রম বা এমবিবিএস এবং নার্সিংয়ের ফাইনাল ইয়ারে পড়ছেন, কিংবা যারা ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করছেন – তাদের অবিলম্বে কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় যুক্ত করা হোক।

– ওই রাজ্যের অনেকগুলো জেলাতেই ‘পজিটিভিটি রেট’ এখন ২০ শতাংশের বেশি – অর্থাৎ যারা কোভিড পরীক্ষা করাচ্ছেন তাদের প্রতি পাঁচজনে অন্তত একজনের রেজাল্ট পজিটিভ আসছে। এই জেলাগুলোতে বিশেষ নজর দিয়ে সেখানে টেস্টিং বাড়ানো, আক্রান্তদের হোম আইসোলেশন বা বাড়িতেই আলাদা থাকার ব্যবস্থা করতে, যেকোনো ধরনের ভিড় বা জমায়েত এড়ানো – এগুলো নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

– এই রাজ্যগুলোকে বলা হয়েছে, প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি করে অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য উপযুক্ত জায়গা চিহ্নিত করতে। কেন্দ্রীয় সরকার ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সারা দেশের প্রত্যেক জেলাতেই কম করে একটি অক্সিজেন ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট গড়ে তোলা হবে।

– এই রাজ্য সরকারগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট বা ভারত বায়োটেকের মতো টিকা প্রস্তুতকারকদের বকেয়া অর্থ অবিলম্বে মিটিয়ে দিতে – যাতে সেখানে ভ্যাক্সিনের চালান অব্যাহত থাকে এবং টিকাকরণের তৃতীয় পর্ব মসৃণভাবে চলতে পারে।

প্রসঙ্গত, ভারতের নানা রাজ্যই এখন অভিযোগ করছে তারা টিকার চালান ঠিকমতো পাচ্ছে না। এ মাসের গোড়া থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সী সবাইকে টিকা দেয়ার যে পরিকল্পনা ভারত সরকার ঘোষণা করেছিল তাও এর ফলে ব্যাহত হচ্ছে।

পূর্ব ভারতে পরিস্থিতি কতটা উদ্বেগের?
পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের ছবি যে কীভাবে সঙ্গীণ হয়ে উঠছে তা দু-একটা উদাহরণ দিলেই স্পষ্ট হবে।

যেমন, বিহারে সোমবারেও মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল সাড়ে ১১ হাজার, গত মাসের শেষ সপ্তাহেও সেই গড় ছিল ১০ হাজারের নিচে। অথচ বৃহস্পতিবার সেই সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজারে পৌঁছেছে, গোটা রাজ্যেই ১৫ মে পর্যন্ত জারি করা হয়েছে লকডাউন।

পুরো রাজ্যেই পজিটিভিটি রেট এখন ২০ শতাংশের বেশি, যা রীতিমতো উদ্বেগজনক।

আসামে সপ্তাহদুয়েক আগেও দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল এক হাজারের নিচে, এখন তা পাঁচ হাজারের কাছাকাছি গিয়ে ঠেকেছে।

পূর্ব ভারতের আরেকটি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গেও মাত্র দিনদশেক আগেও প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ হাজার করে নতুন কোভিড রোগী শনাক্ত হচ্ছিলেন। এখন সেখানেও দৈনিক সংক্রমণ ১৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

এই প্রতিটি রাজ্যেই কোভিডে মৃত্যুর হারও সমানে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।

তবে মহামারীর গতিপথ এখন ‘পূর্বমুখী’ হলেও উত্তর, পশ্চিম বা দক্ষিণ ভারতের পরিস্থিতি যে রাতারাতি খুব ভালো কিছু হয়ে উঠেছে, তা মোটেও নয়।

যেমন, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, গুজরাট ও উত্তরপ্রদেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমলেও এখনো সারা ভারতে সবচেয়ে বেশি ‘কেস লোড’ আসছে কিন্তু এই রাজ্যগুলো থেকেই।

রাজধানী দিল্লিতে যেমন নিয়মিতই প্রতিদিন ২০ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে।

সূত্র : বিবিসি

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 banglahdtv
Design & Develop BY Coder Boss